হলি আর্টিজান হামলার নৃশংসতা আজও তাজা

২০১৬ সালের ১ জুলাই ঢাকার গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে ঘটে যাওয়া নৃশংস সন্ত্রাসী হামলার ৯ বছর আজ। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ সন্ত্রাসী ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত। ওই হামলায় মোট ২২ জন নিহত হন, যাদের মধ্যে ছিলেন বিভিন্ন দেশের নাগরিক—ইতালি, জাপান, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র। পাশাপাশি দুজন পুলিশ সদস্য প্রাণ হারান এবং অনেকেই আহত হন।
সেদিন রাত পৌনে ৯টার দিকে খবর আসে, গুলশানের ৭৯ নম্বর সড়কের হলি আর্টিজান বেকারিতে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে পুলিশের গোলাগুলি চলছে। ইসলামী সন্ত্রাসী সংগঠন নব্য জেএমবির পাঁচ সদস্য বেকারিতে প্রবেশ করে প্রথমে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে ১৮ জন বিদেশিসহ মোট ২২ জনকে নির্মমভাবে হত্যা করে। নিহতদের মধ্যে ৯ জন ইতালীয়, ৭ জন জাপানি, একজন ভারতীয় এবং তিনজন বাংলাদেশি (তাদের মধ্যে একজন দ্বৈত নাগরিক) ছিলেন। হামলায় দুজন পুলিশ কর্মকর্তা শহীদ হন।
সন্ধ্যা থেকে শুরু হওয়া গোলাগুলিতে বনানী থানার ওসি মোহাম্মদ সালাউদ্দীন আহত হন এবং রাত সোয়া ১১টার দিকে মারা যান। পুরো রাত জুড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অস্ত্রধারীদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ স্থাপন করতে পারেনি।
পরবর্তী দিন, ২ জুলাই সকাল পৌনে ৮টায় যৌথ কমান্ডো বাহিনী অভিযান শুরু করে। ‘থান্ডারবোল্ট’ নামে পরিচিত এই বিশেষ বাহিনী বেকারির ভেতরে প্রবেশ করে এবং প্রায় ১২ ঘণ্টা ধরে চলা এই জিম্মি সংকটের অবসান ঘটায়। অভিযান শেষে ১৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয় এবং সাতজন সন্ত্রাসী নিহত হয়।
অভিযানে অংশ নেওয়া পাঁচ কমান্ডো নিহত হন, যারা ছিলেন মীর সামেহ মোবাশ্বের, রোহান ইবনে ইমতিয়াজ (মামুন), নিবরাজ ইসলাম, খায়রুল ইসলাম পায়েল ও শফিকুল ইসলাম উজ্জ্বল।
আইএস দাবি করে, এই হামলায় জড়িত পাঁচ সন্ত্রাসী তাদের ‘সৈনিক’।
বাংলাদেশের ইতিহাসে এক কালো অধ্যায় হিসেবে স্মরণীয় এই ঘটনা দেশের সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ে বিশেষ এক স্মৃতি হয়ে থাকবে।