সোমবার , ২৪ মার্চ ২০২৫
Monday , 24 March 2025
২৪ রমজান ১৪৪৬

ওবায়দুল ইসলাম রবি, রাজশাহী

প্রকাশিত: ২৩:০৯, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

স্বামীসহ ৩জনের বিরুদ্ধে স্ত্রীর মামলা দায়ের

স্বামীসহ ৩জনের বিরুদ্ধে স্ত্রীর মামলা দায়ের

কৌশলে স্ত্রীর সম্ভাবনা সন্তানকে ঔষধ দিয়ে নষ্ট করেছে স্বামী, ডিভোর্সের হুমকি!
থানায় স্বামীসহ ৩জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের

ওবায়দুল ইসলাম রবি, রাজশাহী

স্বামী মোস্তাফিজুর রহমান জনির (৩৪) প্রতরণায় গর্ভবতি স্ত্রী সম্ভবনা সন্তানকে ঔষধ দিয়ে নষ্ট করার বিষয়ে থানায় মামলা হয়েছে। স্বামী কর্তৃক প্রতারণার শিকার এবং হুমকির বিষয়ে ভুক্তভোগী নিজেই আরএমপি মতিহার থানায় গত ৩১ ডিসেম্বর তারিখ ৩জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেছেন।   

অভিযুক্ত রাজশাহী নগরীর (স্মার্ট টেলিকম নামে কাদিরাঞ্জে মোবাইল শো রুম) মোবাইল ব্যবসায়ী। সে বোয়ালীয়া থানাধীন শিরোইল ১নং কলোণীর গোলাম মোস্তফার ছেলে। জনি পূর্বের বিবাহ গোপন রেখে দ্বিতীয় বিবাহ করেন। তার ২য় স্ত্রী মোছাঃ দিপালী খাতুন (৩২)। নগরীর মতিহার থানাধীন ধরমপুর এলাকার আব্দুস সালাম মোল্লার মেয়ে।  
প্রতারণার শিকার দিপালী রাজশাহীর সাংবাদিকদের ইমেইলের মাধ্যমে লিখিত বক্তব্যে বলেন, সে ঢাকায় রেডিও টুডে প্রতিষ্ঠানে ক্রিয়েটিভ ও প্রোডাকশন এডিটর হিসেবে চাকুরী করছেন। বর্তমান সে রাজধানীর বনানীর এ/পি রোড নং-২০ এবং ২৩ নং বাসায় বসবাস করছেন। তারপর থেকেই এই দম্পতি ঢাকা বাসায় এক সঙ্গে বসবাস করতো। অভিযুক্তের সঙ্গে গত ৬মাস পূর্বে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। বিয়ের কিছুদিন পরে সে জানতে পারে তার স্বামী জনি তার বিয়ের পূর্বে প্রথম স্ত্রীর ও ২সন্তান রয়েছে। তবুও তিনি সংসারের সর্থে নিরব ভূমিকায় ছিলেন।   

এদিকে বিবাহের ৩মাস পরে তিনি গর্ভবতী হয়। গত ১৩ অক্টোবর ২৪ তারিখে পেগনেন্সি রিপোর্টে তার প্রমান নিশ্চিত করা হয়েছে। গর্ভপাতের বিষয়টি তার স্বামীকে জানানো হলে, তিনি বলেন এখন বাচ্চা নেওয়ার প্রয়োজন নেই। পক্ষান্তরে শিকারক্তি স্বরূপ তার প্রথম স্ত্রী ও ৩সন্তানের কথা বিবরণ দেয় জনি। সময়ের ব্যবধানে গত ৭ নভেম্বর ২৪ তারিখ ঢাকা থেকে নিজ গ্রামের বাড়ি রাজশাহীতে আসেন দিপালী। গত বছর ৮ নভেম্বর রাত্রী অনুমান ৮.৩০টার সময় তার পেটের ব্যাথা শুরু হয়।  বিষটি তার স্বামীকে জানালে সে ডাক্তারের কাছে না যাওয়ার পরামর্শ দেন। তবে ওই রাত ৯টার সময় তার স্বামী ৫টি ঔষধ দিয়ে বলে এগুলো সেবন করলে পেট ব্যাথা ভালো হয়ে যাবে। ওই ঔষধ খাওয়ার পর গত ১১ নভেম্বর বর্তমান ঢাকা বনানীস্থ বাসায় অবস্থান কালে রাত্রী অনুমান ৯টার সময় তার প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। ঘটনার বিবরণ জনিকে জানালে সে বলে, এম এম কিট ঔষধ দিয়ে বাচ্চা নষ্ট করা হয়েছে। ঘটে যাওয়া বিষয়টি নিয়ে গত নভেম্বর ২৭ তারিখ ঢাকার বনানী আহেলী রেস্তুরেন্ট সমাধানের চেষ্টা করে। পরে জনি বলেন, পরিবারের চাপোর কারনে এই কাজটি তাকে করতে হয়েছে।  তার কিছুদিন পরে দিপালীর কর্মস্থলে পূনরায় রক্তক্ষরণ শুরু হয়। ওই সময় তার অফিসের স্টাফ ফাহিমুর রহমানের সহযোগিতায় ঢাকা কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে চিকাৎসা নেওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক বলেন, ওই ঔষধ সেবনের ফলে পরবর্তীতে গর্ভপাত হওয়ার সম্ভবনা নেই। হাসপাতালের বিষয় গুলো স্বামীকে জানালে, অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং ডিভোর্সসহ বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি দেখায়। এই সক্রান্ত মতিহার থানায় তার স্বামী ও তার বাবা গোলাম মোস্তফা এবং মাতা পারভিনকে আসামী করে একটি মামলা রুজু করা হয়েছে।  

সাবির্ক বিষয়ে জানতে চেয়ে অভিযুক্ত মোস্তাফিজুর রহমান জনিকে ফোন দিলে কোন ভাবেই যোগাযোগ করা যায়নি। যার কারনে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। এবিষয়ে ভুক্তভোগীকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করলে সকল বিষয়ে সত্যতা রয়েছে বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। ওই সময় তিনি বলেন, থানা পুলিশ তার বিষয়টি গুরত্ব দিচ্ছে না। আসামী পক্ষ পুলিশকে ম্যানেজ করার চেষ্টা করছে। 

মতিহার থানা এসআই মিজানুর রহমান বলেন, এই মামলাটির তদন্ত অফিসার তিনি। শনিবার অভিযুক্তের বাড়িতে গিয়েছিলেন। প্রাথমিক ভাবে তদন্ত শুরু করেছেন। তবে অভিযুক্তকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। দ্রুত বিষয়টি থানা পুলিশ তদারকি করবেন। 

আরএমপি অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) সাবিনা ইয়াসমিন পত্রিকার প্রতিনিধিকে জানান, গুরুত্বের সাথে বিষয়টি দেখা হবে এবং তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।   

সর্বশেষ

জনপ্রিয়