ইরানি হামলায় এক রাতে ১০ ইসরায়েলি নিহত, আহত ২৪০

ইসরায়েলের তেল আবিব ও আশপাশের শহরগুলোতে শনিবার (১৪ জুন) রাতভর ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইরান। এই হামলায় বহু ভবন বিধ্বস্ত হয়ে কমপক্ষে ১০ ইসরায়েলি নিহত এবং প্রায় ২৪০ জন আহত হয়েছেন। এছাড়া বেশ কয়েকজন এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।
রোববার (১৫ জুন) ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল এ তথ্য জানিয়েছে।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সর্বশেষ হিসাব অনুসারে- শনিবার রাতের হামলায় তিন ধাপে মোট ৭০টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং কয়েক ডজন ড্রোন ছুঁড়ে ইরান। এর মধ্যে প্রথম দফায় রাত ১১টায়, দ্বিতীয় দফায় রাত ২টা এবং সর্বশেষ রাত ২টা ৫৫ মিনিটে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন নিক্ষেপ করা হয়েছিল।
বিবৃতিতে বলা হয়, হামলায় একটি ক্ষেপণাস্ত্র তামরা শহরের একটি বাড়িতে আঘাত হানে, এতে চারজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হন; আরেকটি ক্ষেপণাস্ত্র বাত ইয়ামে আঘাত হানে, যার ফলে কমপক্ষে ছয়জন বেসামরিক নিহত এবং প্রায় ২০০ জন আহত হয়। এছাড়াও একটি ক্ষেপণাস্ত্র রেহোভোটে আছড়ে পরলে আরও ৪০ জন আহত হন। এখনও নিখোঁজ রয়েছেন প্রায় তিনজন।
আইডিএফ বলছে, এখন পর্যন্ত ইরানের আক্রমণ মাত্রা তারা যা প্রত্যাশা করেছিল তার চেয়ে অনেক কম। আইডিএফ অনেক বেশি সংখ্যক হতাহত এবং আরও উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতির অনুমান করেছিল। তবে ইরানের কাছে এখনো হাজার হাজার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
ইরানের সামরিক নেতৃত্বকে অকার্যকর করা, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদন কেন্দ্রগুলো ধ্বংস করা এবং নাতানজ ও ফোরদোর মতো পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ক্ষতিসাধন করার শুক্রবার (১৩ জুন) ভোর থেকে দুই দফায় ইরানের ওপর হামলা চালায় ইসরায়েল। প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক ‘অপারেশন ট্রু প্রমিজ-৩’ অভিযান শুরু করে ইরান। অভিযানে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত সামরিক ঘাঁটিসহ ইসরায়েলের কমপক্ষে ১৫০টি লক্ষ্যবস্তুতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান।
প্রথমে শুক্রবার (১৩ জুন) স্থানীয় সময় ভোররাতে ইসরায়েল ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামে একটি সামরিক অভিযান শুরু করে। এই অভিযানে তেহরানের বিভিন্ন আবাসিক ভবন, সামরিক ঘাঁটি ও পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। অভিযানে অন্তত ২০০টি যুদ্ধবিমান অংশ নেয় এবং ১০০টিরও বেশি লক্ষ্যবস্তুতে একযোগে হামলা চালানো হয়। এই হামলায় ইরানে এখন পর্যন্ত প্রায় ১০০ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে বেসামরিক নাগরিক, র্শীষ সামরিক কর্মকর্তা ও পরমাণু বিজ্ঞানীও রয়েছেন।
এর জবাবে ইসরায়েলের বাণিজ্যিক রাজধানী তেল আবিবসহ গুরুত্বপূর্ণ অন্যান্য শহেরে ড্রোন ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। ইরানের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোনের আঘাতে জেরুজালেম ও তেল আবিবের বেশ কিছু স্থাপনা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।