‘মানবাধিকার রক্ষায় নয়, ভিন্নমত দমনে মনোযোগী অন্তর্বর্তী সরকার’

বাংলাদেশে ক্ষমতাসীন অন্তর্বর্তী সরকারের গত এক বছরে সাধারণ মানুষের অধিকার রক্ষার চেয়ে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমনে বেশি মনোযোগ দিচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। বুধবার প্রকাশিত সংস্থাটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভিন্নমত দমন ও নিরাপত্তা বাহিনীর অপব্যবহার আগের সরকারের মতোই অব্যাহত রয়েছে।
এইচআরডব্লিউ বলছে, বিশেষ ক্ষমতা আইন ব্যবহার করে এখনও শত শত মানুষকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সহিংসতা, রংপুরে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা, নারী ও যৌন সংখ্যালঘুদের প্রতি বৈষম্য—এসব ঘটনাকে উদ্বেগজনক নজির হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ক্ষমতায় আসা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারও এখনো নিরাপত্তা বাহিনী ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার সংস্কৃতি থেকে বের হতে পারেনি। “অপারেশন ডেভিল হান্ট”-এর মতো অভিযানে আট হাজার ৬০০ জনের বেশি গ্রেপ্তার, উত্তর ঢাকার সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ৬৮টি হত্যা মামলা দায়ের—এসব উদাহরণ তুলে ধরে বলা হয়, এসব ঘটনার পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে।
এদিকে সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিবেদনটিকে ‘একপেশে’ আখ্যা দিয়ে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, “গত এক বছরে হাজার হাজার হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারসহ সাইবার আইন সংস্কার করা হয়েছে।” তবে তিনি স্বীকার করেন, কিছু মামলায় নির্বিচারে আসামি করার ঘটনা ঘটেছে।
এইচআরডব্লিউ-এর এশিয়া উপপরিচালক মীনাক্ষী গাঙ্গুলি বলেন, “সরকার বিশাল চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হলেও, মানবাধিকার রক্ষায় আরও অনেক কিছু করার প্রয়োজন।”