যেভাবে পাকিস্তানের সশস্ত্র সংগঠনে জড়াচ্ছে বাংলাদেশি তরুণরা

পাকিস্তানে জঙ্গি সংগঠন তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের (টিটিপি) হয়ে লড়াইয়ে একের পর এক বাংলাদেশি তরুণের নাম আসছে সামনে। সাম্প্রতিক সময়ে দেশটির সামরিক বাহিনীর অভিযানে নিহত হয়েছেন মাদারীপুরের ফয়সাল ও নর্থ ওয়াজিরিস্তানে আহমেদ জুবায়ের নামে আরেক তরুণ। এদের সঙ্গে যোগসূত্র থাকার অভিযোগে গত জুলাইয়ে বাংলাদেশে দুই তরুণকে আটক করেছে পুলিশ। এতে নতুন করে প্রশ্ন উঠছে—কীভাবে পাকিস্তানি সশস্ত্র সংগঠনে যোগ দিচ্ছে বাংলাদেশিরা? বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনের আলোকে জেনে নেই এসব তথ্য।
ঢাকায় পুলিশের জঙ্গি দমন সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র বলছে, দীর্ঘদিন ধরেই টিটিপির জন্য বাংলাদেশ থেকে সদস্য সংগ্রহের একটি নেটওয়ার্ক সক্রিয়। এ নেটওয়ার্ক পরিচালনার নেতৃত্বে আছেন ইঞ্জিনিয়ার ইমরান হায়দার নামের এক ব্যক্তি। পুলিশের দায়ের করা মামলার এজাহারেও তার নাম উল্লেখ আছে।
গবেষক ও পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, পাকিস্তান-আফগানিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠনগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের উগ্রপন্থীদের যোগাযোগ নতুন কিছু নয়। অতীতে ঢাকার বায়তুল মোকাররম এলাকায় প্রকাশ্যে মুজাহিদ সংগ্রহের পোস্টারও দেখা গিয়েছিলো। বর্তমানে এ কার্যক্রম অনেকটা নিয়ন্ত্রণে এলেও পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। পাকিস্তানে বাংলাদেশিদের নিহত হওয়ার ঘটনা তারই প্রমাণ।
আটক ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, টিটিপির নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ থেকে প্রথমে সৌদি আরব বা দুবাই হয়ে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে লোক পাঠায়। এর আগে ২০২৪ সালে আটক হওয়া দুজনও একইভাবে ওমরাহর নামে সৌদি আরব হয়ে পাকিস্তানে গিয়েছিলেন। তাদের একজন দেশে ফেরেন, অপরজন জুবায়ের পরবর্তীতে ওয়াজিরিস্তানে নিহত হন।
টিটিপি মূলত পাকিস্তানের পাঠান মাদ্রাসা ছাত্রদের নিয়ে ২০০৭ সালে গঠিত হয়। শুরু থেকেই দলীয় বিভাজন থাকলেও ২০২০ সালে আবার এক হয় সংগঠনটি। তারা পাকিস্তানে কথিত ‘ইসলামি শাসন’ কায়েম করতে চায়। দেশটির বিভিন্ন হামলার দায়েও টিটিপির নাম এসেছে।
এ বিষয়ে মানবাধিকারকর্মী নূর খান লিটন বলেন, “বাংলাদেশি তরুণদের পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠনে সম্পৃক্ততার বিষয়টি অনেক পুরনো। তবে এখন অনেকটাই কমেছে। কিন্তু সম্প্রতি নিহত দুই তরুণ দেখিয়ে দিলো—ঝুঁকি এখনও শেষ হয়নি।”