মঙ্গলবার , ১৪ অক্টোবর ২০২৫
Tuesday , 14 October 2025
২১ রবিউস সানি ১৪৪৭

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১৭:১৯, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

রাজশাহীতে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার আড়ালে অ্যালকোহল ব্যবসা

রাজশাহীতে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার আড়ালে অ্যালকোহল ব্যবসা
ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহীতে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার নামে ভয়ঙ্কর অনিয়ম চলছে। অসাধু ফার্মেসি মালিকদের একটি শ্রেণি চিকিৎসা সেবার আড়ালে অ্যালকোহল বিক্রি করছে নেশাগ্রস্তদের কাছে। জেলার প্রায় তিনগুণ বেশি হোমিও ফার্মেসি অনুমোদন ছাড়াই চলছে, যাদের নেই কোনো ড্রাগ সনদ কিংবা বৈধ প্রশিক্ষণ। ফলে মূলধারার হোমিও চিকিৎসা ধীরে ধীরে নেশার ব্যবসায় রূপ নিচ্ছে। এতে সাধারণ মানুষ প্রতারিত হওয়ার পাশাপাশি হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার সুনামও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা আবিষ্কার করেন জার্মান চিকিৎসক স্যামুয়েল হ্যানিম্যান। তিনি বিশ্বাস করতেন, লঘূকৃত ওষুধ স্নায়ুর মাধ্যমে শরীরে কাজ করে এবং রোগের মূলে থাকা "মিয়াসম" দূর করতে সক্ষম। তবে বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, রাজশাহীর বিভিন্ন এলাকায় ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা হোমিও ফার্মেসিগুলো এ চিকিৎসা পদ্ধতিকে ব্যবহার করছে ভিন্নভাবে। গ্রামীণ সহজ-সরল মানুষদের টার্গেট করে তারা নকল ওষুধ ও অ্যালকোহল বিক্রি করছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, রাজশাহীর নয়টি উপজেলায় অধিকাংশ হোমিও ফার্মেসির কোনো অনুমোদন নেই। চারঘাটে ১৪টির মধ্যে মাত্র তিনটি ফার্মেসির সনদ রয়েছে। সারদায় ১৩টির মধ্যে বৈধ কাগজপত্র আছে কেবল দুইটির। একই চিত্র দেখা যায় অন্য উপজেলাগুলোতেও। স্থানীয়দের অভিযোগ, দিনের পর দিন জটিল রোগে চিকিৎসা দেওয়ার নামে অনেক ভুয়া চিকিৎসক রোগীদের বিভ্রান্ত করছেন।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, পূর্বপুরুষরা হোমিও ঔষুধে কার্যকর ফল পেলেও বর্তমানে এসব ওষুধে আর আগের মতো কাজ হয় না। অনেক সময় রোগীরা দেরিতে বুঝতে পেরে আধুনিক চিকিৎসায় গেলে ততক্ষণে অবস্থা জটিল হয়ে যায়।

জেলা হোমিও অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য মিজানুর রহমান জানান, বহু অবৈধ ফার্মেসি নামে-বেনামে ব্যবসা করছে। কিছু মালিক ইতোমধ্যে অ্যালকোহল বিক্রির দায়ে কারাগারেও ছিলেন, জামিনে বের হয়ে আবারো আগের ব্যবসা শুরু করেছেন। তার অভিযোগ, এসব অনিয়মের কারণে হোমিও চিকিৎসার সুনাম নষ্ট হচ্ছে।

জেলা ঔষধ প্রশাসনের সহকারী পরিচালক কেএম মহশিনিন মাহাবুব বলেন, রাজশাহীতে ১১৫টি ফার্মেসি ড্রাগ সনদ পেয়েছে। তবে জনবল সংকটের কারণে নিয়মিত তদারকি সম্ভব হচ্ছে না। তিনি স্বীকার করেন, হোমিও ঔষধের অ্যালকোহল স্থানীয় পর্যায়ের মাদকাসক্তরা কিনে নেশায় ব্যবহার করছে। তার দাবি, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা ছাড়া এ ধরনের অনিয়ম ঠেকানো সম্ভব নয়।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়