রোববার , ১৩ জুলাই ২০২৫
Sunday , 13 July 2025
১৬ মুহররম ১৪৪৭

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১৬:৫৯, ২৭ মে ২০২৫

কুখ্যাত রাজাকার আজহার পেলেন বেকসুর খালাস

কুখ্যাত রাজাকার আজহার পেলেন বেকসুর খালাস
ছবি: সংগৃহীত

যুদ্ধাপরাধ মামলায় দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের রায় বাতিল করে জামায়াতে ইসলামীর নেতা কুখ্যাত রাজাকার এ টি এম আজহারুল ইসলামকে সব অভিযোগ থেকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। ছয় বছর পর দ্বিতীয়বার শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের সাত সদস্যের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ মঙ্গলবার একমত হয়ে এই রায় দেন।

গত জুলাই-আগস্টের সহিংসতার মাধ্যমে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে আসা এই রায়ে যুদ্ধাপরাধ মামলায় রিভিউ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রথমবারের মতো কেউ আপিলে খালাস পেলেন। রায় ঘোষণার পর আদালত প্রাঙ্গণে উল্লাস করেন আজহারের আইনজীবীরা। সেখানে শোনা যায় “নারায়ে তাকবির” স্লোগানও।

আজহারের আইনজীবী মো. শিশির মনির তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় দাবি করেন, “এই রায়ের মধ্য দিয়ে সত্য জয়ী হয়েছে, মিথ্যা পরাজিত হয়েছে।”

রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক, তবে তিনি রায় নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।

২০১৪ সালে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ছয়টি অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে আজহারুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এরপর ২০১৯ সালে প্রথমবারের আপিলে সেই রায় বহাল রাখে আপিল বিভাগ। তবে বর্তমান আপিল বিভাগ বলেছে— “যে সমস্ত তথ্য প্রমাণ এই মামলায় ছিল, তা অতীতের আপিল বিভাগ সঠিকভাবে বিবেচনা করতে ব্যর্থ হয়েছে।”

২০১২ সালের ২২শে আগস্ট মগবাজারের বাসা থেকে গ্রেপ্তার হন একাত্তরের ঘাতক আজহারুল ইসলাম। সেই থেকে তিনি কারাবন্দি ছিলেন। আপিল বিভাগের বর্তমান রায়ে তাকে সব অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

এটিএম আজহারুল ইসলামের জন্ম ১৯৫২ সালের ২৮শে ফেব্রুয়ারি রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেলার বাতাসন লোহানীপাড়া গ্রামে। বাবার নাম নাজির হোসাইন, মা রামিসা বেগম। ১৯৬৮ সালে রংপুর জিলা স্কুল থেকে মেট্রিক পাস করে পরের বছর তিনি ভর্তি হন রংপুর কারামাইকেল কলেজে। একত্তরে যখন মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়, আজহার তখন জামায়াতের সেই সময়ের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র সংঘের জেলা কমিটির সভাপতি ছিলেন।

মামলার নথি মোতাবেক, ১৬ই ডিসেম্বর স্বাধীনতাযুদ্ধে বাংলাদেশের বিজয়ের আগে আগে রাজাকার আজহার দেশ ছেড়ে পালিয়ে সৌদি আরবে চলে যান। ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর আজহার গোপনে দেশে ফেরেন। ১৯৮০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্সও করেন।

স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান জামায়াতে ইসলামীকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে পুনর্বাস করেন। যার ফলে দলের বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন আজহার। ১৯৯১ সালে তিনি ঢাকা মহানগর জামায়াতের আমিরের দায়িত্ব পান এবং ২০০৫ সালে কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হন। জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ যুদ্ধাপরাধের মামলায় গ্রেপ্তারের পর কিছুদিন ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেলের দায়িত্ব পালন করেন আজহার। ২০১২ সালের ২২শে অগাস্ট তিনিও যুদ্ধাপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার হন।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়